বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর পুরোপুরি দখলে নেওয়ার দাবি করেছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গত রোববার মংডুতে সামরিক জান্তার বর্ডার গার্ড পুলিশ ডিভিশন (নাখাখা-৫)-এর শেষ পোস্টটিও দখল করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে মিয়ানমারের নাফ নদের জলসীমায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের নৌযান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে; যেন আরাকান থেকে পালিয়ে কেউ বাংলাদেশের দিকে যেতে না পারে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জল-স্থলপথে টহল জোরদার করেছে কোস্টগার্ড ও বিজিবি।
আরাকান আর্মির প্যাডে গত ৮ ডিসেম্বর জারি করা বিবৃতির একটি অনুলিপি সমকালের হাতে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, রোববার সকালে আরাকান আর্মি সফলভাবে মংডু অঞ্চলে অবস্থিত সামরিক জান্তার বর্ডার গার্ড পুলিশ ডিভিশন (নাখাখা-৫)-এর শেষ পোস্টটি দখলে নিয়েছে। জান্তার সশস্ত্র সদস্যদের সঙ্গে তাদের মিত্র দলগুলো, যার মধ্যে ইসলামী চরমপন্থি সশস্ত্র দল আরএসও, আরএসএ এবং এআরএ রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু সদস্য সশস্ত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিল। তারা এখনও এলাকায় লুকিয়ে আছে। এ অস্ত্রধারীরা অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত। নাখাখা-৫ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া জান্তা সদস্যসহ আরএসও, আরএসএ, এআরএ এবং অন্য সশস্ত্ররা নৌযান ব্যবহার করে নাফ নদ দিয়ে বাংলাদেশ-আরাকান সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করছে। তাই সামরিক প্রয়োজনীয়তা এবং জননিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে নাফ নদে (আরাকান অঞ্চল) ৮ ডিসেম্বর বিকেল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌযান চলাচল স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হলো।
এ বিষয়ে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি আরাকান আর্মি মংডু শহর দখলে নিয়েছে। এ নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত। কেননা এবার আরাকান আর্মি সে দেশে থাকা রোহিঙ্গাদের জান্তা সরকারের সঙ্গে মিলে যুদ্ধের কথা বলে বিতাড়িত করার শঙ্কা রয়েছে। কেননা কেউ রোহিঙ্গাদের জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।
এদিকে আরাকান আর্মির ঘোষণা আসার পর সর্তকাবস্থা চলছে বাংলাদেশের টেক নাফ সীমান্তেও। ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি, আরাকান আর্মি টেকনাফের ওপারে দেশটির সীমান্ত এলাকা পুরোপুরি দখলে নিয়েছে। রোববার থেকে আরাকান আর্মি সে দেশের জলসীমায় নাফ নদে সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই আমরাও টেকনাফের মাছ ধরার ট্রলার মালিকদের অবগত করিছি, নাফ নদ সীমান্ত এ মুহূর্তে অতি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সেখানে কোনো ট্রলার না যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।
আরাকান আর্মির বিবৃতি ও নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জেনেছি উল্লেখ করে কোস্টগার্ডের চট্টগ্রাম মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সোয়াইব বিকাশ বলেন, ‘যে কেউ হোক, আমরা বাংলাদেশ জলসীমায় কাউকে ঢুকতে দেব না। জালিয়ার দ্বীপ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত নাফ নদ-সাগরে আমাদের টহল জোরদার রয়েছে। পাশাপাশি জেলেদের জলসীমানা অতিক্রম না করতে বলা হচ্ছে।’
টেকনাফ ২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ বলেন, ‘সীমান্তে যে কোনো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও নিরাপত্তায় নাফ নদ এবং স্থলে বিজিবির সদস্যরা সোচ্চার রয়েছেন। এ ছাড়া সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সতর্ক অবস্থানে আছে। সমকাল
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে তিনি কোথায় গেছেন সে বিষয়ে জানা ...
পাঠকের মতামত